প্রকাশিত:
৭ অক্টোবর, ২০২৫
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার ৭ অক্টোবর সকালে সাক্ষাৎকারের দ্বিতীয় পর্ব প্রকাশ করা হয়।
সাক্ষাৎকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে প্রশ্ন করা হয়– আপনি কয়েক মাস আগে একটি মন্তব্য করেছিলেন যে, অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে সন্দেহ তৈরি হয়েছে। আপনার মনে সেই সন্দেহ এখনো আছে? জবাবে তারেক রহমান বলেন, ‘দেখুন আমি যখন এই কথাটি বলেছিলাম, এই মুহূর্তে আমার যতটুকু মনে পড়ে সেই সময় পর্যন্ত ওনারা কিন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে সঠিক কোনো টাইম ফ্রেম বা কোনো কিছু বলেননি। রোডম্যাপ বলতে যা বুঝায়, আমরা নরমালি যা বুঝে থাকি, এরকম কিছু বলেননি। সে কারণেই শুধু আমার মনের মধ্যেই নয়, আমরা যদি সেই সময় বিভিন্ন মিডিয়া ব্যক্তিত্ব দেখি যারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা করেন রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে, প্রায় সকলের মনের মধ্যেই সন্দেহ ছিল।’
‘আমরা যখন দেখলাম যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান ড. ইউনূস উনি মোটামুটিভাবে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন। পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার উনি উনার যে সিদ্ধান্ত সেটির ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেছেন। তারপর থেকেই খুব স্বাভাবিকভাবেই এই সন্দেহটি বহু মানুষের মন থেকে ধীরে ধীরে চলে যেতে ধরেছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি, উনারা যা বলেছেন উনারা যতক্ষণ পর্যন্ত দৃঢ় থাকবেন, উনাদের বক্তব্যে উনাদের কাজে যত বেশি দৃঢ় থাকবেন, ততই সন্দেহ চলে যাবে আস্তে আস্তে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক কেমন– জানতে চাইলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিষয়টি তো রাজনৈতিক। এটি তো কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়। আমরা প্রথম থেকে যে কথাটি বলেছি যে, আমরা চাই, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সফল হোক। অর্থাৎ অনেক কিছুর মত বিভিন্ন বিষয় আছে- যেমন আমরা যদি মূল দুটো বিষয় বলি যে, কিছু সংস্কারের বিষয় আছে, একই সাথে প্রত্যাশিত সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, স্বাধীন নির্বাচনের একটি বিষয় আছে।’
‘মূলত কিছু সংস্কারসহ যেই সংস্কারগুলো না করলেই নয়, এরকম সংস্কারসহ একটি স্বাভাবিক সুষ্ঠু, স্বাধীন নির্বাচন অনুষ্ঠিত করাই হচ্ছে বর্তমান সরকারের মূল লক্ষ্য। আমরা প্রত্যাশা করি যে, উনারা উনাদের উপরে যেটা মূল দায়িত্ব, সেটি উনারা সঠিকভাবে সম্পাদন করবেন। এটাই তো উনাদের কাছে আমাদের চাওয়া রাজনৈতিক দল হিসেবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা আশা রাখি, প্রত্যাশা করি যে, উনারা করবেন কাজটি সুন্দরভাবে। স্বাভাবিকভাবে এই কাজটির সৌন্দর্য্য বা কতটুকু ভালো, কতটুকু ভালো বা মন্দভাবে করতে পারছেন, তার ওপরেই মনে হয় সম্পর্কের উষ্ণতা বা শীতলতা যেটাই বলেন, সেটা নির্ভর করবে।’
সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে, দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রে অন্তর্বর্তী সরকারকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানে ইন্টেরিম, মানে এটা তো ক্ষণস্থায়ী বিষয়টি। তো খুব স্বাভাবিকভাবেই একটি দেশ পরিচালনা তো একটি বিশাল বিষয়। আমরা হয়তো ভূখণ্ডের ভিত্তিতে যদি বিবেচনা করি, হয়তো বাংলাদেশকে অনেকে বলবে ছোট দেশ। কিন্তু আমরা যদি জনসংখ্যার ভিত্তিতে বিবেচনা করি, বাংলাদেশ পৃথিবীর অনেক ভূখণ্ডের চেয়ে বড় দেশ।’
যুক্তরাজ্যের জনসংখ্যা সাত কোটির মতো, বাংলাদেশের জনসংখ্যা প্লাস-মাইনাস ২০ কোটির মতো এখন। কাজেই ইউকের তিন গুণ বড়। এরকম একটি দেশ পরিচালনা করতে হলে স্বাভাবিকভাবেই জনগণের ম্যান্ডেটসহ একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক সরকার প্রয়োজন। বিভিন্ন বিষয় থাকে, ইস্যুজ থাকে, বিভিন্ন বিষয় আছে।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘তো এখন নির্বাচনের বাইরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পারফরমেন্স আপনি যেটা বললেন, আমরা সকল কিছু বিবেচনা করলে আমার কাছে মনে হয়েছে যে, হয়তো উনারা চেষ্টা করেছেন অনেক বিষয়ে। সব ক্ষেত্রে সবাই তো আর সফল হতে পারে না, স্বাভাবিকভাবে ওনাদের লিমিটেশনস কিছু আছে। সেই লিমিটেশনসের মধ্যে উনারা হয়তো চেষ্টা করেছেন, যতটুকু পেরেছেন হয়তো চেষ্টা করছেন।’