প্রকাশিত:
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
ইংল্যান্ডের সাবেক অলরাউন্ডার মঈন আলী, ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী মিডফিল্ডার পল পগবা, ব্রিটিশ বক্সার জ্যাক চেল্লি, হিজাব পরা প্রথম ব্রিটিশ নারী জকি খাদিজা মেল্লা, ক্রিস্টাল প্যালেসের চিয়েক ডৌকুরে, চেলসির সাবেক তারকা হাকিম জিয়েচ, ডাচ উইঙ্গার আনোয়ার এল ঘাজি এবং লেস্টার সিটির সাবেক কোচ নাইজেল পিয়ার্সনসহ অনেকে ইউরোপীয় ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফার উদ্দেশে চিঠি পাঠিয়েছেন। তাদের একটাই দাবি—ইসরায়েলকে অবিলম্বে উয়েফার প্রতিযোগিতা থেকে বহিষ্কার করা হোক।
এই তালিকায় বিশেষভাবে আলোচিত আনোয়ার এল ঘাজি। জার্মান ক্লাব মেইঞ্জের হয়ে খেলার সময় ২০২৩ সালে ফিলিস্তিনের সমর্থনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করার কারণে তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করেছিল ক্লাবটি। পরে জার্মান আদালত জানায়, ঘাজির সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। বর্তমানে তিনি কাতারের আল সাইলিয়া ক্লাবে খেলছেন।
অ্যাথলেটদের পাঠানো চিঠিতে ফিলিস্তিনি কিংবদন্তি ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবেইদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়েছে। ‘ফিলিস্তিনি পেলে’ নামে পরিচিত এই ফুটবলার গত আগস্টে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত হন। চিঠিতে লেখা হয়, ‘জীবিত অবস্থায় খেলাধুলার মাধ্যমে তিনি আশা জাগিয়েছিলেন। মৃত্যুর মাধ্যমে মনে করিয়ে দিলেন, কেন এখনই আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংস্থাগুলোর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
চিঠির সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনও। সেখানে অভিযোগ করা হয়েছে, গাজার ফিলিস্তিনিদের ‘জাতিগত নিধনের’ উদ্দেশ্যে অভিযান চালাচ্ছে ইসরায়েল। যদিও ইসরায়েল এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
ব্রিটেনভিত্তিক নুজুম স্পোর্টসের উদ্যোগে ‘অ্যাথলেটস ফর পিস’ ব্যানারে উয়েফায় জমা দেওয়া চিঠিতে বলা হয়, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ন্যায়বিচারের পক্ষে দাঁড়াতে ইচ্ছুক খেলোয়াড়েরা এতে সই করেছেন। শেষ অংশে লেখা হয়, ‘আমরা উয়েফাকে আহ্বান জানাই, ইসরায়েলকে সব প্রতিযোগিতা থেকে অবিলম্বে বহিষ্কার করুন।
যত দিন না তারা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলে, বেসামরিক মানুষ হত্যা বন্ধ করে। খেলাধুলা কখনোই নিরপেক্ষ থাকতে পারে না। নীরব থাকা মানে হলো অন্যায় মেনে নেওয়া।’
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল ইসরায়েলকে ফুটবল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছিল। প্যালেস্টাইন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনও ফিফার সর্বশেষ দুটি কংগ্রেসে একই দাবি তোলে।
তবে যুক্তরাষ্টের অবস্থান এর বিপরীত। দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ঘোষণা দিয়েছে, ২০২৬ বিশ্বকাপে ইসরায়েলকে নিষিদ্ধ করার যে কোনো উদ্যোগ প্রতিহত করবে তারা। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বিবিসি স্পোর্টকে বলেন, ‘আমরা নিশ্চিত করব, ইসরায়েলের জাতীয় ফুটবল দলকে বিশ্বকাপ থেকে নিষিদ্ধ করার কোনো প্রচেষ্টা সফল না হয়।’
এর মধ্যেই গাজায় সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। তবু ফিফা ও উয়েফার আয়োজিত প্রতিযোগিতায় নিয়মিত অংশ নিচ্ছে ইসরায়েলের জাতীয় ও ক্লাব দলগুলো। আগামী ১১ অক্টোবর অসলোতে নরওয়ের বিপক্ষে এবং ১৪ অক্টোবর ইতালির উদিনেসে বিশ্বকাপ বাছাই ম্যাচ খেলবে তারা। বর্তমানে ৯ পয়েন্ট নিয়ে নিজেদের গ্রুপে তৃতীয় স্থানে আছে ইসরায়েল। শীর্ষে থাকা নরওয়ের চেয়ে ৬ পয়েন্ট পেছনে আছে তারা।