প্রকাশিত:
২৬ অক্টোবর, ২০২৫

ট্রাম্প লেখেন, ‘তাদের তথ্যের মারাত্মক ভুল উপস্থাপনা এবং শত্রুভাবাপন্ন কাজের কারণে আমি কানাডার ওপর বর্তমানে যে শুল্ক আছে, তার সঙ্গে আরও ১০ শতাংশ শুল্ক বৃদ্ধি করছি।’
ওই বিজ্ঞাপনের কারণে গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনা থেকেও যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
পরদিন অন্টারিওর প্রিমিয়ার (মুখ্যমন্ত্রী) ডাগ ফোর্ড সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি তাঁর প্রদেশে যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কবিরোধী বিজ্ঞাপনের প্রচার স্থগিত রাখবেন। বাণিজ্য আলোচনা পুনরায় শুরু করতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির সঙ্গে আলোচনা করে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন।
তবে ডাগ ফোর্ড এ–ও বলেছিলেন, বিজ্ঞাপনটি সপ্তাহান্তে চলবে। এমনকি ওয়ার্ল্ড সিরিজের খেলার সময়ও সেটি প্রচার করা হবে।
ট্রাম্প শুল্ক বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া পর কানাডার যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রী ডমিনিক ল্যাবলাং বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে সামনে অগ্রসর হতে আমরা প্রস্তুত আছি।’
গতকাল নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, বিজ্ঞাপনটি আগেই সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল।
ট্রাম্প লেখেন, ‘তাদের উচিত ছিল ওই বিজ্ঞাপন অবিলম্বে সরিয়ে ফেলা। কিন্তু তারা গত রাতেও ওয়ার্ল্ড সিরিজে সেটি চালিয়েছে। তারা জানত যে এটা প্রতারণা।’
ট্রাম্প এখন আসিয়ানের শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে মালয়েশিয়ায় রয়েছেন। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নিও গিয়েছেন সেখানে।
ওই সম্মেলনের ফাঁকে কার্নির সঙ্গে বৈঠকের কোনো ইচ্ছা তাঁর নেই বলে এয়ারফোর্স ওয়ানে থাকা সাংবাদিকদের বলেছেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার দেশগুলোর পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের উদ্যোগ নেন। ট্রাম্পের ওই উদ্যোগের পর জি–৭ ভুক্ত একমাত্র দেশ কানাডা, যাঁরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এখন পর্যন্ত শুল্ক বিষয়ে কোনো চুক্তিতে উপনীত হতে পারেনি।
রোনাল্ড রিগ্যানের যে বিজ্ঞাপন নিয়ে ট্রাম্প খেপেছেন, সেটি অন্টারিও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি। ওই বিজ্ঞাপনে রিগ্যানকে একটি বক্তব্য দিতে দেখা যায়। যেখানে তিনি বলছেন, শুল্ক প্রত্যেক আমেরিকানের জন্য ক্ষতিকর।
এটি ১৯৮৭ সালে সম্প্রচারিত তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিগ্যানের একটি বক্তব্যের খণ্ডিত অংশ। ট্রাম্পের মতোই রিপাবলিকান রিগ্যান ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদে ছিলেন।
রোনাল্ড রিগ্যান ফাউন্ডেশন থেকেও বিজ্ঞাপনটির সমালোচনা করা হয়েছে। তারা বলেছে, ওই বিজ্ঞাপনে রিগ্যানের অডিও ও ভিডিও থেকে কিছু অংশ আলাদা করে রিগ্যানের বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপনে রিগ্যানের বক্তব্য ব্যবহারের জন্য অন্টারিও সরকার তাদের অনুমতি নেয়নি বলেও জানিয়েছে রোনাল্ড রিগ্যান ফাউন্ডেশন।
যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে কানাডার সব পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। যদিও ওই সব পণ্যের বেশির ভাগই দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান মুক্তবাণিজ্য চুক্তির অধীন শুল্কমুক্ত প্রবেশসুবিধা পায়।
যুক্তরাষ্ট্র কানাডার পণ্যের ওপর নির্দিষ্ট খাতভিত্তিক শুল্কও আরোপ করেছে, যার মধ্যে ধাতুতে ৫০ শতাংশ ও গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক অন্তর্ভুক্ত। তার সঙ্গে এখন ১০০ শতাংশ যুক্ত হচ্ছে। কানাডার তিন-চতুর্থাংশ রপ্তানি পণ্যের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। আর অন্টারিও প্রদেশ কানাডার গাড়ি উৎপাদনের মূল কেন্দ্র।