প্রকাশিত:
গতকাল

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে অর্থ প্রদানের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই ভারতীয় শোধনাগারগুলো সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। যত দিন সরকার বা সরবরাহকারীদের থেকে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না আসবে, তত দিন রাশিয়ার তেল কেনা স্থগিত থাকবে।
রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এমন পরিস্থিতে ভারতীয় কিছু শোধনাগার জরুরি চাহিদা মেটাতে স্পট মার্কেট বা অস্থায়ী বাজার থেকে তেল কেনার চেষ্টা করছে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ইন্ডিয়ান অয়েল করপোরেশন (আইওসি) ইতিমধ্যে নতুন করে তেল আমদানির টেন্ডার আহ্বান করেছে। অন্যদিকে, ভারতের সবচেয়ে বড় বেসরকারি শোধনাগার রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ স্পট মার্কেটে তেল কেনা বৃদ্ধি করেছে।
গত সপ্তাহে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় দুই তেল কোম্পানি—লুকঅয়েল ও রসনেফটের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ট্রাম্প প্রশাসন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও যুক্তরাজ্য আগেই ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে একই ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল।
নতুন নিষেধাজ্ঞা ভারতীয় ক্রেতাদের তেল সরবরাহ ও অর্থ প্রদানের প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়ন করতে বাধ্য করেছে। সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, নিষিদ্ধ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীদের বেশ কিছু চালান ইতিমধ্যে বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ব্যাংকগুলোও কালো তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে লেনদেন না করায় কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছে না।
ভারতীয় একটি শোধনাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, তারা এখন পর্যবেক্ষণ করছেন, নিষেধাজ্ঞাবিহীন মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে তেল কেনা সম্ভব কি না। তিনি বলেন, ‘সরকার ও সরবরাহকারীদের কাছ থেকে স্পষ্টতা না পাওয়া পর্যন্ত আমরা নতুন কোনো অর্ডার দিচ্ছি না।’
২০২২ সাল থেকে ভারতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ। এই প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা মেনে চলবে এবং বিদ্যমান সরবরাহকারীদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখবে। তবে সংস্থাটি ইতিমধ্যে তাদের প্রধান রুশ অংশীদার রসনেফট থেকে তেল আমদানি বন্ধ করেছে বলে জানা গেছে।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার (আইইএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম ৯ মাসে ভারত দৈনিক প্রায় ১৯ লাখ ব্যারেল রুশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে, যা রাশিয়ার মোট রপ্তানির প্রায় ৪০ শতাংশ। তবে ছাড় কমে যাওয়া এবং সরবরাহ-সংকটের কারণে আমদানির প্রবাহ সম্প্রতি ধীর হয়ে পড়ে। এর ফলে চলতি বছরের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে ভারতের রুশ তেল আমদানি আগের বছরের তুলনায় ৮ দশমিক ৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। এই সময়ে ভারত, মধ্যপ্রাচ্য ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলেও জানা গেছে।