প্রকাশিত:
গতকাল

চট্টগ্রামে সোমবার রাতে প্রথম টি২০তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ১৬৫ রানের জবাবে পাওয়ার প্লের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। শেষ স্বীকৃত ব্যাটসম্যান হিসেবে তাওহিদ হৃদয় যখন আউট হন, ১২ ওভারে বাংলাদেশের স্কোর ৬ উইকেটে ৭৭।
আর সেখান থেকে নাসুম আহমেদের সঙ্গে জুটিতে কিছুটা সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন তানজিম। কিন্তু তানজিমের বিদায়ে ২৩ বলে ৪০ রানের ইনিংস সর্বোচ্চ জুটি ভাঙার পর আর পেরে ওঠেনি বাংলাদেশ। তিন বল বাকি থাকতে ১৪৯ রানে গুটিয়ে ১৬ রানে হেরে যায় লিটন কুমার দাসের দল।
রাতের বেলা শিশিরের কারণে বল ব্যাটে আসছিল ভালোভাবে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলা তানজিম ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকলে জিততেও পারতেন তারা।অ্যাক্টিভওয়্যার
“যদি দেখেন, শেষের দিকে শিশিরের কারণে বল অনেক সহজে ব্যাটে আসছিল। আমার মনে হয়, যদি একজন থিতু ব্যাটসম্যান থাকত, তাহলে ম্যাচটা অনেক সহজ হয়ে যেত। শেষ দুই ওভারে ৩০ রান দরকার ছিল, একজন থিতু ব্যাটার থাকলে ম্যাচ হাতের মধ্যেই থাকত।”
শেষ পর্যন্ত থাকতে না পারায় নিজের ইনিংস নিয়েও আক্ষেপ ঝরল তানজিমের কণ্ঠে,‘ আমি যদি ম্যাচ শেষ করতে পারতাম, খুব ভালো লাগত। বল ব্যাটে ভালোভাবে আসছিল, আমি সেট ছিলাম, নাসুম ভাইও ভালো সাপোর্ট দিচ্ছিলেন, বাউন্ডারি মারছিলেন। মনে হচ্ছিল, আমি এক ব্যাটসম্যানকে নিয়েই ব্যাট করছি। যদি আরও কিছুক্ষণ থাকতে পারতাম, হয়তো ম্যাচটা একদম শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারতাম। রিশাদও তখন আসত, ম্যাচটা হয়তো অন্যরকম হতো।’
মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আরও দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করা উচিত ছিল বলে মনে করেন তানজিম সাকিব,‘ “আমরা পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারিয়েছি। তারা যদি থিতু হয়ে আউট হতো, তাহলে চিত্রটা আলাদা হতো। কিন্তু বেশিরভাগই থিতু হওয়ার আগেই আউট হয়ে গেছে। আমার মনে হয়, মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা আরও একটু দায়িত্ব নিতে পারত। যদি তারা ম্যাচটা গভীরে নিয়ে যেতে পারত, তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো।”
এদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে প্রথম টি২০ দলের ১৬ রানে হারের পর ব্যাটিং বিপর্যয় নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন তানজিম হাসান সাকিব। তার মতে, ইনিংসের শুরুতে দ্রুত উইকেট হারানো এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ের কারণেই সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে টাইগারদের।
চট্টগ্রামে তানজিম ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘শেষের দিকে শিশির পড়ায় ব্যাটিং করা সহজ হয়ে গিয়েছিল। যদি একজন সেট ব্যাটার থাকতো, তাহলে শেষ দুই ওভারে ৩০ রান তোলা অসম্ভব ছিল না। উইকেটে থাকা ব্যাটসম্যান থাকলে সেটি সামাল দেওয়া যায়।’
নিজের ২৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘নাসুম ভাইয়ের সঙ্গে ব্যাট করতে ভালো লাগছিল। ইচ্ছে ছিল শেষ পর্যন্ত থেকে ম্যাচটা শেষ করতে। সেটা না পারায় আফসোস থাকবেই।’
তানজিমের মতে, শুরুতেই উইকেট হারানোই ম্যাচের গতি নির্ধারণ করে দেয়। তিনি বলেন, ‘অধিকাংশ ব্যাটার সেট হওয়ার আগেই আউট হয়ে গেছে। মিডল অর্ডারের ব্যাটারদের আরও দায়িত্ব নিতে হতো। যদি তারা একটু বেশি সময় ক্রিজে থাকতো এবং স্ট্রাইক রোটেট করতো, ফলটা ভিন্ন হতে পারত।’
আর শেষ কয়েক ওভারেও জয়ের সুযোগ ছিল বলে জানান তিনি, ‘তাসকিন ভাই আর ফিজ ভাই তখন ব্যাট করছিলেন। নাসুম ভাইয়ের ছক্কাটা যদি বাউন্ডারির ওপারে যেত, তাহলে হয়তো গল্পটা অন্যরকম হতো। ভালো উইকেটে শেষ চার ওভারে প্রতি ওভারে ১০ রান তোলা কঠিন কিছু নয়।’
এছাড়া বোলারদের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবসময় পরিকল্পনা মেনে সহজভাবে বোলিং করি। মোস্তাফিজ, নাসুম, রিশাদ আর তাসকিন—সবাই খুব ভালো বল করেছে। সেই কারণেই আমাদের বোলিং ইউনিট ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে।’
সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার লক্ষ্যে আগামীকাল বুধবার দ্বিতীয় টি২০ ওয়েস্ট ইন্ডিজের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।