প্রকাশিত:
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

সিথ্রিএস (C3S) এর বিজ্ঞানীরা মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) প্রকাশিত তাদের মাসিক বুলেটিনে নিম্নোক্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি উল্লেখ করেছেন:
রেকর্ডের হ্যাটট্রিক: সম্ভবত ২০২৫ সালে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার শিল্প-পূর্ব যুগের (১৮৫০–১৯০০) তুলনায় ১.৫°C (এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এর বেশি হতে পারে। এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো টানা তিন বছর এই উদ্বেগজনক প্রবণতা দেখা যাবে।
সর্বোচ্চ উষ্ণ বছর: বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, উষ্ণতার সর্বোচ্চ রেকর্ডটি ২০২৪ সালই ধরে রাখবে।
তাৎপর্য: সিথ্রিএস-এর জলবায়ু কৌশলবিষয়ক প্রধান সামান্থা বার্জেস বলেন, এই মাইলফলকগুলো “বিমূর্ত কিছু নয়; এগুলোর মধ্য দিয়ে বোঝা যাচ্ছে যে কত দ্রুত জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে।”
চলতি বছরও বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের চরম প্রভাব দেখা গেছে:
চরমভাবাপন্ন ঘটনা: গত মাসে ফিলিপাইনে ঘূর্ণিঝড় কালমায়েগির কারণে ২০০-এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং স্পেনে গত ৩০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলের ঘটনা ঘটেছে।
কারণ: বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত করেছেন যে, এই উষ্ণতার প্রধান কারণ হলো জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানো থেকে তৈরি হওয়া গ্রিনহাউস গ্যাস।
দীর্ঘমেয়াদী প্রবণতা: বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার তথ্যমতে, বৈশ্বিক তাপমাত্রার নথিভুক্তি শুরু করার পর থেকে গত ১০টি বছরই ছিল বিশ্বের সবচেয়ে উষ্ণ বছর।
এই উষ্ণতার রেকর্ডের মাঝেও বৈশ্বিক জলবায়ু মোকাবিলার ক্ষেত্রে ভূরাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ প্রকট হয়েছে:
কপ৩০-এর সিদ্ধান্তহীনতা: গত মাসে অনুষ্ঠিত কপ৩০ জলবায়ু সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলো গ্রিনহাউস গ্যাসের নিঃসরণ কমানোর বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি।
পশ্চাদপসরণ: যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ুবিষয়ক উদ্যোগ কমিয়ে আনার চেষ্টা করছে এবং কয়েকটি দেশ কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ কমানোর বিধিমালা দুর্বল করার চেষ্টায় আছে।
লক্ষ্যচ্যুতি: ২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তিতে দেশগুলো বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হার ১.৫°C সীমার মধ্যে রাখার ব্যাপারে সম্মত হয়েছিল। তবে জাতিসংঘ চলতি বছরই বলেছে, এই লক্ষ্যটি আর বাস্তবে পূরণ করা সম্ভব নয়। জাতিসংঘ দেশগুলোকে দ্রুত কার্বন নিঃসরণ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে, যেন লক্ষ্য সামান্য অতিক্রম করলেও ক্ষতি সীমিত রাখা যায়।