প্রকাশিত:
গতকাল

২০০৭ সালে এক-এগারোর পট পরিবর্তনের সময় তারেক রহমান গ্রেপ্তার হন এবং ২০০৮ সালে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য সপরিবারে যুক্তরাজ্যে চলে যান। সেই থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তারেক রহমানের বিভিন্ন সাজার রায় বাতিল এবং কিছু মামলায় আইনি প্রক্রিয়ায় অব্যাহতি মেলে। এরপর থেকেই তাঁর দেশে ফেরার আলোচনা জোরালো হয়। এতদিন বিএনপি নেতারা সুনির্দিষ্ট তারিখ না জানালেও, এবার সেই জল্পনার অবসান ঘটল।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জীবন সংকটাপন্ন হয়ে উঠলে তারেক রহমানের দেশে ফেরার বিষয়টি আরও প্রকট হয়। সেই সময় তারেক রহমান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক পোস্টে লিখেছিলেন, মায়ের স্নেহ-স্পর্শ পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা থাকলেও, তাঁর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ‘একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ অবারিত ও একক নিয়ন্ত্রণাধীন নয়’। তবে তিনি আশা প্রকাশ করেছিলেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুকূল হলেই তাঁর সুদীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটবে।
এরপর সরকারের পক্ষ থেকে বারবার জানানো হয়, তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো আইনি বাধা নেই।
স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে মির্জা ফখরুল আলমগীর বলেন, তারেক রহমানের দেশে আগমন গণতন্ত্রের উত্তরণের পথে সৃষ্ট সব বাধা দূর করতে সাহায্য করবে। তিনি এই আগমনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা চেয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে বিএনপি মহাসচিব সাম্প্রতিক দুটি ঘটনা নিয়েও দলের অবস্থান স্পষ্ট করেন:
১. ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণ: বিএনপি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানায় এবং এটিকে নির্বাচন বানচাল করার চক্রান্ত বলে আখ্যায়িত করে। তারা দ্রুত দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানায়।
২. মির্জা আব্বাসের সমাবেশে উত্তেজনা: মির্জা ফখরুল জানান, ঢাকা-৮ আসনের প্রার্থী মির্জা আব্বাস হাসপাতালে সহানুভূতি জানাতে গেলে কিছু ব্যক্তি ও সমর্থক উত্তেজনামূলক স্লোগান ও 'মব' সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। বিএনপি এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে হুঁশিয়ার করে দেয় যে, এ ধরনের কর্মকাণ্ডের জবাব তারা সঙ্গে সঙ্গে দেবে।
মির্জা ফখরুল জোর দিয়ে বলেন, বিএনপি কোনো গোলযোগ বা সন্ত্রাস চায় না, তবে দলের ওপর কোনো আঘাত এলে তারা সেটি সহজভাবে নেবে না এবং এর জবাব দিতে তারা প্রস্তুত। তিনি সবাইকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বজায় রাখতে এবং গণতন্ত্রের উত্তরণের পথকে ব্যাহত না করার আহ্বান জানান।
ব্রিফিংয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্যসহ খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।