news@weeklyinqilab.com|| 86-11 101 AVENUE, OZONE PARK, NY, 11416, USA
ব্রেকিং:

অর্থনীতি

সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় কোম্পানির গ্যারান্টি প্রত্যাহার পেট্রোবাংলার

Next.js logo

প্রকাশিত:

১৭ আগস্ট, ২০২৫

নিউজটি শেয়ার করুন:

বাংলাদেশের অগভীর সমুদ্রের ৪ ও ৯ নম্বর ব্লকে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে যুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ওএনজিসি ভিদেশ (ওভিএল) ও অয়েল ইন্ডিয়া লিমিটেড (ওআইএল) কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। পেট্রোবাংলা তাদের পারফরম্যান্স ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহার করার পর প্রতিষ্ঠান দুটি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। প্রায় এক দশক আগে শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ব্যর্থ হওয়ার মধ্য দিয়ে সমুদ্রভিত্তিক জ্বালানি অনুসন্ধানে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা বড় ধরনের ধাক্কা খেল।

Thumbnail for সাগরে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান: ভারতীয় কোম্পানির গ্যারান্টি প্রত্যাহার পেট্রোবাংলার
ইনকিলাব

২০১২ সালে ব্লক এসএস-০৪ (৭,২৬৯ বর্গকিমি) ও এসএস-০৯ (৭,০২৬ বর্গকিমি) অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ভারতীয় কোম্পানি দুটিকে। পরে রাষ্ট্রায়ত্ত বাপেক্সকে নিয়ে একটি কনসোর্টিয়াম গঠন হয়, যেখানে ওএনজিসি ও ওআইএলের শেয়ার ছিল ৪৫% করে এবং বাপেক্সের ১০%। ২০১৪ সালে উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) স্বাক্ষরিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সিসমিক জরিপ সম্পন্ন হলেও বাণিজ্যিকভাবে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের নিশ্চয়তা মেলেনি। ২০১৯ সালে রিগ বসানো শুরু হলেও কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে খনন কার্যক্রম বিলম্বিত হয়। ২০২১ সালে মহেশখালীর কাছে একটি কূপ খনন শুরু হলেও আশানুরূপ ফল আসেনি।

ওএনজিসি ভিদেশ: ব্যাংক গ্যারান্টি প্রত্যাহারের কারণে লোকসান ধরা হয়েছে প্রায় ২৮৩ কোটি রুপি।

অয়েল ইন্ডিয়া: বাংলাদেশে দুটি ব্লক থেকে সরে যাওয়ার ফলে প্রায় ৩০৭ কোটি রুপি প্রভিশন দেখিয়েছে। এই লোকসান দুই প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক প্রতিবেদনে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্কের টানাপোড়েন প্রকাশ্য হয়েছে। কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের অস্বস্তি জ্বালানি খাতেও প্রভাব ফেলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিস্থিতি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আস্থায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশ বর্তমানে জ্বালানির একটি বড় অংশ আমদানির ওপর নির্ভরশীল। এলএনজি আমদানি, কয়লা ও বিদ্যুৎ খাতে বিদেশি সরবরাহের ওপর নির্ভরতা বেড়েছে। সমুদ্রভিত্তিক ব্লকগুলোতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য না পাওয়ায় দেশীয় জ্বালানি মজুত বাড়ানোর আশা বারবার ব্যর্থ হচ্ছে।

দেশে প্রমাণিত গ্যাস মজুত দ্রুত ফুরিয়ে আসছে। বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে। ফলে আমদানিনির্ভরতা আরও বাড়বে, যা বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে ঝুঁকি তৈরি করবে।

১. বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ: ভারতীয় কোম্পানির সরে যাওয়া অন্য দেশীয় বা আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করতে পারে। নতুন টেন্ডার আহ্বান করা হলেও আস্থা ফেরাতে সরকারের বাড়তি উদ্যোগ নিতে হবে। ২. প্রযুক্তি ও দক্ষতার ঘাটতি: বাপেক্স একা গভীর সমুদ্র বা জটিল গ্যাসক্ষেত্রে কাজ করার মতো সক্ষমতা রাখে না। উন্নত প্রযুক্তি ছাড়া সফল অনুসন্ধান কঠিন। ৩. কূটনৈতিক সমন্বয়: বাংলাদেশকে বহুপাক্ষিকভাবে কাজ করতে হবে—যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চীন বা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিষ্ঠানগুলোকে যুক্ত করে নতুন কনসোর্টিয়াম গঠনের চেষ্টা প্রয়োজন। ৪. বিকল্প জ্বালানি কৌশল: নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ বাড়ানো, জ্বালানি দক্ষতা বৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক বিদ্যুৎ বাণিজ্যে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো যেতে পারে।

ভারতীয় কোম্পানিগুলোর সরে যাওয়া শুধু একটি অনুসন্ধান প্রকল্পের সমাপ্তি নয়, বরং বাংলাদেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় নতুন অনিশ্চয়তার ইঙ্গিত। একদিকে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন হ্রাস, অন্যদিকে সমুদ্রভিত্তিক অনুসন্ধানে ব্যর্থতা—সব মিলিয়ে আগামী দিনগুলোতে জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরতা আরও বাড়বে। এ অবস্থায় বাংলাদেশকে দ্রুত বিকল্প জ্বালানি উৎস খোঁজা এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব জোরদার করার পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা জরুরি।

বিজ্ঞাপন কর্নার

আমাদের সম্পর্কে

সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতিঃ শাহ নেওয়াজ

উপদেষ্টা সম্পাদকঃ পাভেল মাহমুদ

ইংরেজি পাতার সম্পাদকঃ ফুহাদ হোসেন

ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ মোঃ বদরুদ্দোজা সাগর

প্রকাশক ও সম্পাদকঃ মোহাম্মদ জাহিদ আলম

স্টেশন ইনচার্জঃ মো: মিদুল ইসলাম মৃদুল

টেকনিক্যাল ইনচার্জঃ মো: রাশেদুজ্জামান রাজু

অনুসরণ করুন

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন