এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনী। কপিরাইট © ২০২৫
সাপ্তাহিক ইনকিলাব কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনী। কপিরাইট © ২০২৫
সাপ্তাহিক ইনকিলাব কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
প্রকাশিত:
২৯ মে, ২০২৫
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক (জানুয়ারি-মার্চ) নিয়ে গতকাল বুধবার এমসিসিআই প্রকাশিত পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এমন মত তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, রপ্তানি আয় এবং প্রবাসী আয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করছে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির গতিশীলতাও পুনরুদ্ধার হচ্ছে। পাশাপাশি সামষ্টিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। তৃতীয় প্রান্তিকে কৃষি ও শিল্প খাতে প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়েছে। তবে কৃষিঋণ প্রায় ৭ শতাংশ কমে গেছে। রাজস্ব আদায়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ব্যাংকিং খাতের বিপুল অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারিকে অর্থনীতির অগ্রগতির পথে বড় বাধাও হিসেবে তুলে ধরেছে এমসিসিআই। সংস্থাটির প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত সময়ে ব্যাংক খাতে নিয়ন্ত্রক সংস্থার মারাত্মক দুর্বলতা এবং বড় ধরনের ঋণ কেলেঙ্কারির কারণে অর্থনীতির পুনরুদ্ধার বিলম্বিত হয়েছে। তবে এমসিসিআই আশা করছে, ব্যাংকিং খাত সংস্কার এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে, তা জিডিপি প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদনে বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক অস্থিরতার বিষয়টিও গুরুত্বসহকারে তুলে ধরা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বজুড়ে চলমান সংঘাত ও অনিশ্চয়তা বাংলাদেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে প্রভাব ফেলতে পারে। এখনো বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে দেশের অর্থনীতি। দেশে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড় কমেছে ১৪ শতাংশের বেশি। রপ্তানি খাত বিশেষ করে তৈরি পোশাকশিল্পে এখন কিছুটা স্থিতিশীলতা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য তুলে ধরে বলা হয়, গত মার্চ ও এপ্রিলে রপ্তানি আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রবাসী আয়ও আশাব্যঞ্জক হারে বেড়েছে, যা ডলারের সরবরাহে কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। একই সঙ্গে বাড়ছে আমদানির পরিমাণও। গত মার্চে আমদানি আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৫ শতাংশ বেড়েছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের প্রবাহ ২৬ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশের বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগের পরিমাণ প্রতিযোগী অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।
প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি নিয়ে বলা হয়, টানা তিন মাস ধরে নিম্নমুখী প্রবণতার পর এ বছরের মার্চে সার্বিক মূল্যস্ফীতি সামান্য বেড়ে ৯ দশমিক ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৩২ শতাংশ। দেশের খাদ্যনিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে এমসিসিআই বলছে, তৃতীয় প্রান্তিকে সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে মোট খাদ্যশস্য (চাল ও গম) আমদানির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ দশমিক ৩ লাখ মেট্রিক টনে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় যা ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি।
এমসিসিআইয়ের প্রতিবেদনে সার্বিকভাবে বলা হয়েছে, অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও সেটি দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই করতে হলে ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে স্বচ্ছতা এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।