এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনী। কপিরাইট © ২০২৫
সাপ্তাহিক ইনকিলাব কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনী। কপিরাইট © ২০২৫
সাপ্তাহিক ইনকিলাব কর্তৃক সর্বসত্ব ® সংরক্ষিত
প্রকাশিত:
২ ঘন্টা আগে
ইভিএমের ব্যর্থ অভিজ্ঞতা- ইসির অতীত কর্মকাণ্ডের উদাহরণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা তুলে ধরছেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) কেনার প্রকল্প। কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা হলেও ইভিএম দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বড় কোনো অবদান রাখতে পারেনি। রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, ভোটগ্রহণে জটিলতা ও আস্থার সংকটের কারণে আজ অনেক মেশিনই অব্যবহৃত অবস্থায় গুদামে পড়ে আছে।
এক নির্বাচন বিশ্লেষক বলেন, “ইভিএম কেনার সময় বাস্তবতা উপেক্ষা করা হয়েছিল। বডি ক্যামেরা কেনার ক্ষেত্রেও একই ভুল করা হচ্ছে।”
বডি ক্যামেরা ব্যবহারের সক্ষমতা- বডি ক্যামেরা সাধারণত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে নির্বাচনকর্মী ও মাঠপর্যায়ের নিরাপত্তা সদস্যরা কতটা দক্ষতার সঙ্গে এগুলো ব্যবহার করতে পারবেন—তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
চার্জ ও মেমোরি ব্যবস্থাপনায় অনভিজ্ঞতা,
প্রশিক্ষণের অভাব,
ধারণকৃত ভিডিওর নিরপেক্ষ প্রকাশ ও সংরক্ষণের নিশ্চয়তা না থাকা
এসব কারণে প্রকল্পের কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রবল।
ব্যয় বনাম বাস্তব ফলাফল- বাংলাদেশে মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৪০ হাজারের বেশি। সেই হিসাবে ৪৫ হাজার ক্যামেরা দিয়ে প্রতিটি কেন্দ্র সমানভাবে কাভার করা সম্ভব নয়। অনেক ক্ষেত্রে একটি ক্যামেরা কেবল আনুষ্ঠানিকতা পূরণেই ব্যবহৃত হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক মতামত দেন,
“নির্বাচনে আস্থা ফেরাতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও নিরপেক্ষ ভূমিকা জরুরি। বডি ক্যামেরা কিনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা শুধু নতুন এক লুটপাটের পথ খুলে দেবে।”
লুটপাটের প্রকল্পের আশঙ্কা-
অতীতে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে যেভাবে দাম ফুলিয়ে দেখানো, নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কেনা এবং অস্বচ্ছতা দেখা গেছে, বডি ক্যামেরা প্রকল্পেও সেই আশঙ্কা প্রবল।
আন্তর্জাতিক বাজারে তুলনামূলক কম দামে পাওয়া গেলেও, স্থানীয়ভাবে দাম বাড়ানো হতে পারে।
কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত না হলে ক্যামেরাগুলো অল্পদিনেই অকেজো হয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিকল্প পথের প্রয়োজন
বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে হলে প্রযুক্তিতে অন্ধ বিনিয়োগ নয়, বরং—
ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা,
নির্বাচনকর্মীদের প্রশিক্ষণ,
নিরপেক্ষ নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা,
পর্যবেক্ষকদের কার্যকর অংশগ্রহণ,
এসবের ওপর জোর দেওয়া উচিত।
৪৫ হাজার বডি ক্যামেরা কেনার মাধ্যমে ইসি নতুন ব্যয়ভার সৃষ্টি করলেও নির্বাচনী স্বচ্ছতা কতটা বাড়বে—তা নিয়ে গুরুতর সংশয় রয়েছে। অতীতের মতোই এ প্রকল্পও অকার্যকর হয়ে পড়তে পারে এবং ‘লুটপাটের আরেকটি কৌশল’ হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।